০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

নান্দনিকতার পরশে ঠায় দাড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক মাই সাহেবা জামে মসজিদ

  • আপডেট: ০৯:১২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
  • 71

বিজয়ের আলো ডেস্ক : শেরপুর জেলা-শহরের প্রাণকেন্দ্রে শেরপুর সরকারি কলেজ। এর দক্ষিণ পাশে একটি নান্দনিকতার পরশে ঠায় দাড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক মাই সাহেবা জামে মসজিদ। এই ঐতিহাসিক মসজিদটির নামকরণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটা গল্প প্রচলিত। বলা হয়, একদিন শেরপুরের তিনআনি জমিদার মুক্তাগাছার জমিদারকে দাওয়াত করেন।

দাওয়াতের উত্তরে মুক্তাগাছার জমিদার শেরপুরে একটি জায়গা চান, যেখানে তিনি বিশ্রাম করবেন। আর সে সময় এ স্থানে তিনআনা জমিদারের খাজনা আদায়ের ঘরের পাশে একটা আলাদা ঘর ছিল, জমিদার ঘরের জায়গাটা মুক্তাগাছার জমিদারকে দেবেন বলে মনস্থির করেন এবং এ জন্য হাতি দিয়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু হাতি যখনই ঘরটির কাছে আসে তখনই হাতিটি মাথা নুইয়ে বসে পড়ে। খবর পেয়ে তিনআনি জমিদার এসে দেখেন ঘরের ভেতর একজন নারী আল্লাহর ইবাদতে মশগুল।

জমিদার ব্যাপারটিকে অলৌকিক মনে করেন এবং ক্ষমা চেয়ে ঘর ভাঙা থেকে বিরত থাকেন। এই ধর্মপ্রাণ নারীর নাম ছিল মাই সাহেবা। তার মৃত্যুর পর জমিদার এখানে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন এবং এর নাম দেন মাই সাহেবা জামে মসজিদ। বর্তমানে মসজিদের ব্যাপক সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ করা হলেও তাতে ঐতিহ্যের ছাপ রক্ষা করা হয়েছে।

সুউচ্চ দুটি মিনার চোখে পড়ে অনেক দূর থেকে। তা ছাড়া আরো অসংখ্য ছোট-বড় সুচারু মিনার ও গম্বুজ মূল স্থাপনার শোভাবর্ধন করেছে।

ধারণা করা হয়, আজ থেকে অন্তত আড়াই শ বছর আগে এটি নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে মসজিদটি তিনতলাবিশিষ্ট একটি অভিজাত ভবন, নিচতলা সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মসজিদের দ্বিতীয় তলায় রয়েছে হুজরাখানা বা মুয়াজ্জিন কক্ষ, এখান থেকেই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান প্রতিধ্বনিত হয়। অজুর জন্য রয়েছে দু’টি পৃথক অজুখানা। একটি মসজিদের দক্ষিণ পাশে অন্যটি উত্তর পাশে।

মাই সাহেবা জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা মুতাসিম বিল্লাহ জানান, সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মসজিদে তিনি ছাড়াও নিয়োজিত আছেন একজন মুয়াজ্জিন এবং পাঁচজন খাদেম। পুরো মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও এখানে একাধিক ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এখানে অসংখ্য বয়স্ক শিক্ষার্থী পবিত্র কোরআন শেখেন।

Tag :

১৭ বছরে ছাত্রদল প্রকৃত রাজনীতি করতে পারেনি —-শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

নান্দনিকতার পরশে ঠায় দাড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক মাই সাহেবা জামে মসজিদ

আপডেট: ০৯:১২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

বিজয়ের আলো ডেস্ক : শেরপুর জেলা-শহরের প্রাণকেন্দ্রে শেরপুর সরকারি কলেজ। এর দক্ষিণ পাশে একটি নান্দনিকতার পরশে ঠায় দাড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক মাই সাহেবা জামে মসজিদ। এই ঐতিহাসিক মসজিদটির নামকরণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটা গল্প প্রচলিত। বলা হয়, একদিন শেরপুরের তিনআনি জমিদার মুক্তাগাছার জমিদারকে দাওয়াত করেন।

দাওয়াতের উত্তরে মুক্তাগাছার জমিদার শেরপুরে একটি জায়গা চান, যেখানে তিনি বিশ্রাম করবেন। আর সে সময় এ স্থানে তিনআনা জমিদারের খাজনা আদায়ের ঘরের পাশে একটা আলাদা ঘর ছিল, জমিদার ঘরের জায়গাটা মুক্তাগাছার জমিদারকে দেবেন বলে মনস্থির করেন এবং এ জন্য হাতি দিয়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু হাতি যখনই ঘরটির কাছে আসে তখনই হাতিটি মাথা নুইয়ে বসে পড়ে। খবর পেয়ে তিনআনি জমিদার এসে দেখেন ঘরের ভেতর একজন নারী আল্লাহর ইবাদতে মশগুল।

জমিদার ব্যাপারটিকে অলৌকিক মনে করেন এবং ক্ষমা চেয়ে ঘর ভাঙা থেকে বিরত থাকেন। এই ধর্মপ্রাণ নারীর নাম ছিল মাই সাহেবা। তার মৃত্যুর পর জমিদার এখানে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন এবং এর নাম দেন মাই সাহেবা জামে মসজিদ। বর্তমানে মসজিদের ব্যাপক সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ করা হলেও তাতে ঐতিহ্যের ছাপ রক্ষা করা হয়েছে।

সুউচ্চ দুটি মিনার চোখে পড়ে অনেক দূর থেকে। তা ছাড়া আরো অসংখ্য ছোট-বড় সুচারু মিনার ও গম্বুজ মূল স্থাপনার শোভাবর্ধন করেছে।

ধারণা করা হয়, আজ থেকে অন্তত আড়াই শ বছর আগে এটি নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে মসজিদটি তিনতলাবিশিষ্ট একটি অভিজাত ভবন, নিচতলা সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মসজিদের দ্বিতীয় তলায় রয়েছে হুজরাখানা বা মুয়াজ্জিন কক্ষ, এখান থেকেই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান প্রতিধ্বনিত হয়। অজুর জন্য রয়েছে দু’টি পৃথক অজুখানা। একটি মসজিদের দক্ষিণ পাশে অন্যটি উত্তর পাশে।

মাই সাহেবা জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা মুতাসিম বিল্লাহ জানান, সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মসজিদে তিনি ছাড়াও নিয়োজিত আছেন একজন মুয়াজ্জিন এবং পাঁচজন খাদেম। পুরো মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও এখানে একাধিক ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এখানে অসংখ্য বয়স্ক শিক্ষার্থী পবিত্র কোরআন শেখেন।