লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
জাটকা ইলিশ মাছ রক্ষায় লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে দুই মাস সব ধরনের মাছধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সময়ে ইলিশ মাছ ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য বিভাগ। নিষেধাজ্ঞাকালীন বিকল্প কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের আওতায় জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে ৪টি উপজেলায় এ বছর ২৮ হাজার ৩৪৪ জেলেকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জাটকা রক্ষা ও ইলিশ মাছ বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরের ষাটনল হতে লক্ষ্মীপুরের রামগতির চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর নি¤œ অববাহিকার ১০০ কিলোমিটার নৌ-সীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই অভয়াশ্রম এলাকা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বরফকলসমূহের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান। একই সঙ্গে মাছ ধরা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথাও জানান তিনি। পাশাপাশি মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। আইন অমান্যকারীর ১ বছর থেকে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা ৫ হাজার টাকা জহারিমানা অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, নিষিদ্ধ সময় জেলেদের মাছধরা থেকে বিরত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ওই সময় বিকল্প কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের আওতায় জেলায় এ বছর ৪০ কেজি করে ২৮ হাজার জেলে ৩৪৪ জেলে পরিবারকে ২ হাজার ২৫৬ মেট্রিকটন খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে জেলেসহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান তিনি। অভিযান সফল হলে চলতি বছর ২৭ হাজারেরও বেশী মেট্রিকটন ইলিশ উৎপাদনে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন এ কর্মকর্তা বলেন যা গেলো বছর ছিল ২৬ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন ছিল।
এদিকে স্থানীয়দের তথ্যমতে, জেলায় প্রকৃত জেলের সংখ্যা রয়েছে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশী, মৎস্য বিভাগের উদাসীনতা,চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দায়িত্বহীনতায় কার্ডধারী হয়েও সরকারি খাদ্য সহায়তা না পাওয়া, পরিবার নিয়ে নিষিদ্ধ সময়ে মানবেতর জীবন যাপনসহ নানা অভিযোগও আছে স্থানীয় জেলেদের।