লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে রিয়াজ হোসেন নামে এক যুবককে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে তার সহকর্মী মো. কাউসার হোসেন ও রাকিব হোসেনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন। রায়ের সময় দুই আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ভিকটিম রিয়াজ ও দণ্ডপ্রাপ্ত কাউসার সহকর্মী ছিলেন পেশায় কাঠমিস্ত্রী ছিলেন। তারা দণ্ডপ্রাপ্ত কাউসার সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে এবং রাকিব তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের বিনোদধর্মপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। ভিকটিম রিয়াজ হোসেন দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতোলা গ্রামের মৃত খোকনের ছেলে।
কাউসার আদালতে রিয়াজকে খুনের দায় স্বীকার করে জানায়, তারা দুইজন একই সাথে ফার্নিসারের নকশার কাজ করতো। বিভিন্ন জায়গায় রিয়াজ কাজ কন্ট্রাক নিলেও কাউসারকে কম টাকা দিত। এছাড়া কাউসারের স্ত্রীর সাথে রিয়াজ বিভিন্ন সময়ে মুঠোফোনে কথা বলতো। এতে রিয়াজের প্রতি সন্দেহ হয় কাউসারের। কাউসার তার বন্ধু রিয়াজের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা দুইজন একসাথে মান্দারী বাজারের দিঘলী সড়কের মুখে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকতো। ২০২৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারী রাতে ওই বাসায় রিয়াজকে জুসের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে দিয়ে অজ্ঞাত করে হাত-পা বাঁধে কাউসার। রিয়াজের চেতনা ফিরে আসলে সে হাত-পা বাঁধার কারণ জানতে চাইলে কাউসার তার মুখে গামছা গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওই কক্ষে মৃতদেহ রেখে পরদিন কাউসার তার আত্মীয় রাকিবকে সাথে করে চট্রগ্রামে চলে যায়। সেখান থেকে রিয়াজের নাম্বার থেকে মুক্তিপণ দাবি করে কাউসার। এরপর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় কাউসার ও রাকিব। আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে এ দুই আসামী বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।