লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের ৪ টি আসনে দ্বাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩১ জন। এর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন মোট ২৩ জন। আসন ভিত্তিক মোট প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের নীচে ভোট পেয়েছেন তারা।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট কোনো প্রার্থী যদি না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে নৌকার প্রার্থী রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন খান ৪০ হাজার ৯৪ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন ১৮ হাজার ১৫৬ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থী জাতীয় পার্টির মাহমুদুর রহমান ৭৬৭। তিনি জেলা জাতীয় পার্টির সেক্রেটারি। এছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নিজাম মাখদুম ফারুকী ৪১০, স্বতন্ত্র এম এ গোফরান ৩৪০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোশারফ হোসেন ২৭৬ ভোট পেয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনে নৌকা মার্কায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ১ লাখ ৩০ হাজার ২১১ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এ আসনেই তার স্ত্রী লুবনা পেয়েছেন ৩৪৫ ভোট। নয়নের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের সেলিনা ইসলাম জামানত হারিয়েছেন। তিনি ৯ হাজার ২৮ ভোট পেয়েছেন। অন্য ১০ প্রার্থীর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির আবদুল্লাহ আল মাসুদ ৩২০, ট্রাক প্রতীকের এএফ জসিম উদ্দিন আহমেদ ৯০৩, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির জহির হোসেন ৩৫২ ভোট, জাতীয় পার্টির বোরহান উদ্দিন আহমেদ মিঠু ২ হাজার ৩৮৬ ভোট, মশাল প্রতীকের আমির হোসেন ২৩৯ ভোট, ছড়ি প্রতীকের ইমাম উদ্দিন সুমন ৭১, হাতঘড়ি প্রতীকের ফরহাদ মিয়া ৩২৮, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর রহমান দাদন গাজী ৮৮, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোরশেদ আলম ৫৪৫ ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শরীফুল ইসলাম ৬০১ ভোট পেয়েছেন। এরমধ্যে ভোটের একদিন আগে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর ও ছড়ি প্রতীকের সুমন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। লুবনাসহ এ আসনে ১২ প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু ৫২ হাজার ২৯৩ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী ও রাজধানীর মোহাম্মদ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাত্তার পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৬২৮ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থী মোহাম্মদ রাকিব হোসেন ৪৭৩, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আবদুর রহিম ৩৮২, তৃণমূল বিএনপির নাঈম হাসান ২৮৯ ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মাহবুবুল করিম টিপু ১১৫ ভোট পেয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আবদুল্লাহ ৪৬ হাজার ৩৭২ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনে তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন। আবদুল্লাহর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ ইনু) সহ সভাপতি মোশারফ হোসেন পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮১০ ভোট। আসনটির অন্য ৩ প্রার্থীর মধ্যে ট্রাক প্রতীকের ইস্কান্দার মির্জা শামীম ৭ হাজার ৪৭৪, রকেট প্রতীকের আবদুস সাত্তার পালোয়ান ৬৪৯, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মোহাম্মাদ ছোলায়মান ৩২০ ভোট পেয়েছেন। মাহমুদাসহ এ আসনে ৪ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ ভোট কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। যারা কম ভোট পেয়েছেন তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত।’

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, ‘জামানত বাজেয়াপ্ত নিয়ে এখনো কাজ শুরু করিনি। তবে যারা পর্যাপ্ত ভোট পাননি, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।’