০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জস্থ পাঁচপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সহকারী শিক্ষিকার

  • আপডেট: ১২:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩
  • 21853

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জস্থ পাঁচপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছেন একই বিদ্যালয়ের এক সহকারি শিক্ষিকা। শনিবার (৮ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ওই শিক্ষিকা নিজেই বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন। একই সাথে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান বাবুকেও বিবাদি করা হয়েছে।
এ দিকে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সহকারি শিক্ষিকাকে লাগাতারভাবে যৌন হয়রানি করায় ঘটনার বিচার চেয়ে শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবীতে বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন অভিভাবকসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
পরে খবর পেয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মফিজ উদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বাদীর অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারি শিক্ষিকা ও দুই সন্তানের জননীকে (হোসনা বানু-ছদ্মনাম) বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাবসহ শারিরীক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শনসহ যৌন হয়রানি করে আসছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন। ওই শিক্ষিকা ২০০৪ সাল থেকে পাঁচপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছিলেন।

এ দিকে অভিযুক্ত মহিউদ্দিনও একই সময় একই বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সেই থেকেই মহিউদ্দিনের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওই শিক্ষিকার প্রতি। পরে মহিউদ্দিন পাশর্^বর্তী ইউনিয়নের চরশাহী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে এই বিদ্যালয় থেকে চলে যান। ২০১৯ সালে বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে পুনরায় তিনি ওই পদে বিধি মোতাবেক নিয়োগ লাভ করে আবারও ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

যৌন হয়রানির শিকার ওই শিক্ষিকা সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী একজন অসুস্থ মানুষ। তার বড় ছেলে মেডিকেলে পড়াশোনা করেন এবং দশম শ্রেণিতে পড়–য়া একমাত্র মেয়ে ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে তিনি স্বামীর বাড়িতেই থাকেন।

স্বামীর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময় তাকে শারিরীক সম্পর্ক করার কু-প্রস্তাব দেন। বিষয়টি একাধিকবার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা বা প্রতিকার করেননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন জানান, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলে ওই শিক্ষিকা তার সুনাম ও মর্যাদাহানি করার অপচেষ্টা করছেন। এগুলো তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে করা হচ্ছে।

একই বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান বাবু যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়টির সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি মহল প্রধান শিক্ষক ও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। ওই শিক্ষিকার অভিযোগ সত্য নয়।

চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভূক্তভোগী শিক্ষিকা রাত ১০টায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের আলোকে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

২৫ দিন ধরে নিখোঁজ কলেজ শিক্ষার্থী, ফিরে পেতে পরিবারের আকুতি

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জস্থ পাঁচপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সহকারী শিক্ষিকার

আপডেট: ১২:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জস্থ পাঁচপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছেন একই বিদ্যালয়ের এক সহকারি শিক্ষিকা। শনিবার (৮ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ওই শিক্ষিকা নিজেই বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন। একই সাথে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান বাবুকেও বিবাদি করা হয়েছে।
এ দিকে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সহকারি শিক্ষিকাকে লাগাতারভাবে যৌন হয়রানি করায় ঘটনার বিচার চেয়ে শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবীতে বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন অভিভাবকসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
পরে খবর পেয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মফিজ উদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বাদীর অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারি শিক্ষিকা ও দুই সন্তানের জননীকে (হোসনা বানু-ছদ্মনাম) বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাবসহ শারিরীক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শনসহ যৌন হয়রানি করে আসছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন। ওই শিক্ষিকা ২০০৪ সাল থেকে পাঁচপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছিলেন।

এ দিকে অভিযুক্ত মহিউদ্দিনও একই সময় একই বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সেই থেকেই মহিউদ্দিনের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওই শিক্ষিকার প্রতি। পরে মহিউদ্দিন পাশর্^বর্তী ইউনিয়নের চরশাহী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে এই বিদ্যালয় থেকে চলে যান। ২০১৯ সালে বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে পুনরায় তিনি ওই পদে বিধি মোতাবেক নিয়োগ লাভ করে আবারও ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

যৌন হয়রানির শিকার ওই শিক্ষিকা সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী একজন অসুস্থ মানুষ। তার বড় ছেলে মেডিকেলে পড়াশোনা করেন এবং দশম শ্রেণিতে পড়–য়া একমাত্র মেয়ে ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে তিনি স্বামীর বাড়িতেই থাকেন।

স্বামীর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময় তাকে শারিরীক সম্পর্ক করার কু-প্রস্তাব দেন। বিষয়টি একাধিকবার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা বা প্রতিকার করেননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন জানান, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলে ওই শিক্ষিকা তার সুনাম ও মর্যাদাহানি করার অপচেষ্টা করছেন। এগুলো তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে করা হচ্ছে।

একই বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান বাবু যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়টির সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি মহল প্রধান শিক্ষক ও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। ওই শিক্ষিকার অভিযোগ সত্য নয়।

চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভূক্তভোগী শিক্ষিকা রাত ১০টায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের আলোকে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।