০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

  • আপডেট: ০১:১৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩
  • 14791

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলীতে স্বামী মো. মিলন হোসেনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্ত্রী জাহানারা বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার (৩১ মে) দুপুরে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন। নিহত মিলনের আচার-আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী জাহানারা বেগম তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ গাছের সাথে বেঁধে রাখে। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত জাহানারা আদালতে উপস্থিত ছিলো। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাদি তাদের ছেলে মো. সাফায়েত হোসেন ওরফে মাহবুব। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাগুরিয়া গ্রামে।
মামলা ও আদালত সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল ভোরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে সুপারী গাছের সাথে হাতবাঁধা মিলনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরদিন মিলনের ছেলে সাফায়েত হোসেন বাদি হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নিহত মিলনের স্ত্রী জাহানারা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে সে স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে সে জানায়, স্বামী মিলনের সাথে তার ৩৫ বছরের দাম্পত্য জীবন। তাদের তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। বিয়ের পর মিলন অস্বাভাবিক আচরণ করে আসতো। খিটখিটে স্বভাবের স্বামী মিলন বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন করতো তাকে। এছাড়া সংসারে মনযোগী না হয়ে সে তার মনমতো চলতো। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল তাদের মধ্যে। ঘটনার সময় রমজান মাস ছিল। রমজানের শেষ ১০ দিন স্ত্রী জাহানারা তার স্বামী মিলনকে মসজিদে এতেফাকে বসতে বলে। এতে সে গালমন্দ করে। ঘটনার রাতে জাহানারা বেগম তার স্বামীকে ঘরের পেছনের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে সুপারী গাছের সাথে গরুর দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে। পরে একটি লাইলনের দড়ি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রাখে। পরদিন সকালে জাহানারা নিজেই পরিবারের সদস্যদেরকে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ জানায় এবং দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করে।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ঘটনার ১৩ মাসের মাথায় জাহানারা বেগমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন৷

Tag :

১৭ বছরে ছাত্রদল প্রকৃত রাজনীতি করতে পারেনি —-শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

লক্ষ্মীপুরে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আপডেট: ০১:১৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলীতে স্বামী মো. মিলন হোসেনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্ত্রী জাহানারা বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার (৩১ মে) দুপুরে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন। নিহত মিলনের আচার-আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী জাহানারা বেগম তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ গাছের সাথে বেঁধে রাখে। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত জাহানারা আদালতে উপস্থিত ছিলো। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাদি তাদের ছেলে মো. সাফায়েত হোসেন ওরফে মাহবুব। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাগুরিয়া গ্রামে।
মামলা ও আদালত সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল ভোরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে সুপারী গাছের সাথে হাতবাঁধা মিলনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরদিন মিলনের ছেলে সাফায়েত হোসেন বাদি হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নিহত মিলনের স্ত্রী জাহানারা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে সে স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে সে জানায়, স্বামী মিলনের সাথে তার ৩৫ বছরের দাম্পত্য জীবন। তাদের তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। বিয়ের পর মিলন অস্বাভাবিক আচরণ করে আসতো। খিটখিটে স্বভাবের স্বামী মিলন বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন করতো তাকে। এছাড়া সংসারে মনযোগী না হয়ে সে তার মনমতো চলতো। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল তাদের মধ্যে। ঘটনার সময় রমজান মাস ছিল। রমজানের শেষ ১০ দিন স্ত্রী জাহানারা তার স্বামী মিলনকে মসজিদে এতেফাকে বসতে বলে। এতে সে গালমন্দ করে। ঘটনার রাতে জাহানারা বেগম তার স্বামীকে ঘরের পেছনের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে সুপারী গাছের সাথে গরুর দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে। পরে একটি লাইলনের দড়ি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রাখে। পরদিন সকালে জাহানারা নিজেই পরিবারের সদস্যদেরকে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ জানায় এবং দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করে।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ঘটনার ১৩ মাসের মাথায় জাহানারা বেগমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন৷