সুইটি আক্তার,মাদারীপুর:
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় মোবাইলে লুডু খেলা নিয়ে বকা দেয়ায় রতন মোল্লা (৮) নামের এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা ও সোহান (৯) নামের অপর এক শিশুকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। মোবাইলে লুডু খেলা নিয়ে মেহেদী নামের এক যুবক দুই শিশুকে বেড়াতে নেয়ার কথা বলে এক্সপ্রেস হাইওয়েতে ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। শিবচর থানা পুলিশ মেহেদীকে গ্রেপ্তার করলে সে হত্যা করার কথা স্বীকার করে হত্যার কারন হিসেবে এই তুচ্ছ ঘটনাকে উল্লেখ করে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের চরকান্দি এলাকার নানা আনসু বেপারির বাড়িতে কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসেন, মেয়ের ঘরের নাতি মো. মেহেদী হাসান (১৮) নানা বাড়িতে আসার পর মেহেদী পার্শ্ববর্তী কৃষক জসিম মোল্লার একমাত্র ছেলে ১ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রতন মোল্লা (৮) ও নাসির সিকদারের ছেলে সোহান (৯) এর সাথে মোবাইলে লুডু খেলতো। মঙ্গলবার সকালে সোহানের মায়ের মোবাইল নিয়ে মেহেদী , সোহান, রতন ৩ জন লুডু খেলে। খেলার সময় রতন ও সোহান, মেহেদীর মা কে উল্লেখ করে বকা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয় মেহেদী হাসান, পরে শিশু দুটিকে হত্যার ছক কষে। সে মোতাবেক মঙ্গলবার বিকেলে ঘোরানো ও নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে পদ্মা সেতুর এপ্রোচ সড়ক সংলগ্ন নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সে সময় ও রতন মোল্লা (৮),নামে শিশু মায়ের মোবাইল সাথে নিয়ে যায়,
সেখানে গিয়ে সোহানকে পানি চানাচুর আনার জন্য ১শ’ টাকা দিয়ে দোকানে পাঠায় । সোহান খাবার আনতে চলে যায় তক্ষণ সন্ধ্যা নেমে গেছে। সোহান যেতেই মেহেদী রতনকে ওই নির্জন স্থানে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। প্রায় ২০ মিনিট পর সোহান এসে রতন কোথায় জানতে চায়। মেহেদী জানায়, রতন বাড়ি চলে গেছে। এ কথা বলে মেহেদী সোহানকে নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় রওনা হয়ে যায়,। সেখানে নির্জন স্থানে নিয়ে সোহানকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করলে সোহান চিৎকার করিলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে মেহেদী নানা বাড়ি পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা সোহানকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে।
এদিকে হত্যা কারি পালিয়ে নানা বাড়িতে গেলে পরিবারের লোকজন মেহেদীর সারা শরীরে কাদামাখা দেখে রতন ও সোহানের স্বজনেরা রতন ও সোহানের খোঁজ জানতে চাওয়ায় কৌশলে মেহেদী বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা শিবচর থানায় খবর দেয়।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান, ওসি মো. মিরাজ হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমির সেরনিয়াবাতসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে ও হত্যাকাণ্ডের স্থানে গিয়ে রতনের লাশ দেখিয়ে দেয়
উদ্ধার করা হয় রতন মোল্লা (৮)নামের লাশ ও সঙ্গে নিয়ে যাওয়া মায়ের মোবাইল ফোনটিও লাশের সাথে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে।
শিশু হত্যা কারি ঘাতক মেহেদী বলে, মোবাইলে লুডু খেলার সময় ওরা আমার বাবা মাকে নিয়ে বকা দেয়। তাই ওদের আমি হত্যা করি।
এবিষয় শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন জানান,খবর পেয়ে সাথে সাথে গিয়ে হত্যা কারি মেহেদী কে আটক করে আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে রতন মোল্লা (৮)নামে শিশু হত্যার ঘটনা স্বীকার করে ঘটনা স্থানে নিয়ে যায়, রতন মোল্লার লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়, তদন্তের জন্য বুধবার সকালে মাদারীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply