সালমা হক রিয়া,নোয়াখালী থেকে:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে একটি মাদ্রাসায় রাতের খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে আরও ১৭জন মাদ্রাসা ছাত্র নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই এক ছাত্রের মৃত্যু হয়।
নিহত নিশান নুর হাদী (৯) উপজেলার ৭নং একলাশপুর ইউনিয়নের পুর্ব একলাশপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়ার ছেলে। সে মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিম খানার নূরানী বিভাগের প্রথম ছাত্র ছিল।
সোমবার (২ আগস্ট) রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার ৭নং একলাশপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা কমপ্লেক্স ও এতিম খানার রাতের খাবারের খাদ্যে বিষক্রিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিম খানার সুপারিনটেন্ড ইসমাইল হোসেন জানান, সোমবার দুপুরের দিকে মাদ্রাসায় মাংস রান্না করে। এরপর একই দিন এশার নামাজের পরে মাদ্রাসার আবাসিক বিভাগের ২০জন ছাত্র ওই মাংস দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১৮জন ছাত্র অসুস্থ হয়ে সবাই পেট ব্যাথায় বোমি করতে থাকে। এ সময় মাদারাসার একজন আবাসিক শিক্ষক বিষয়টি অবহিত করে এবং একজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে মাদরাসায় ডেকে আনে। পরবর্তীতে পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে অসুস্থ ১৮জন ছাত্রকে কয়েক ধাপে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার মোট শিক্ষার্থী ১২০ জন। প্রথম ধাপে ১৮ জন রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে বাকী ওই খাবার আর কেউ খায়নি। এ মাদ্রাসায় মোট ৭০জন শিক্ষার্থী দৈনিক খাবার খায়। অসুস্থদের বরাত দিয়ে স্থানীয়রা জানায়, মাংসে একটু গন্ধ ছিল। অসুস্থদের মধ্যে নিশান মাদ্রাসাতেই মারা যায়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে খাদ্যে বিষক্রিয়া (ফুড ফয়জনিং) এর কারণে রাতের খাবার খেয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থদের মধ্যে নিশান নামে এক মাদ্রারাসা ছাত্রকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৭জন মাদ্রাসা ছাত্র অসুস্থ অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানা, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। খাবারের সাথে কোন বিষাক্ত পদার্থ মেশানো হয়েছে কিনা তা তদন্ত করতে বাকী খাবার পরীক্ষার জন্যে জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply