সালমা হক রিয়া,নোয়াখালী থেকে:
নোয়াখালীর সেনবাগে বিকাশ প্রতারক চক্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপবৃত্তি কাগজপত্রে ভুল সংশোধন ও করোনার প্রণোদনা প্রদানের কথা বলে শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের বিকাশ একাউন্টের গোপন পিন নাম্বার হাতিয়ে নিয়ে একাউন্ট থেকে ও নগদে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বিকাশ প্রতারক চক্র।

প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সেনবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সেনবাগের লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আলম সবুজ।

জানাগেছে, নোয়াখালীর সেনবাগে উচ্চ শিক্ষার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, সেনবাগ সরকারি ডিগ্রি কলেজ, লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মহিলা কলেজ, বালিয়াকান্দি সুলতান মাহমুদ ডিগ্রি কলেজ, কানকিরহাট বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজ, ও আকবর আলী কারিগরি কলেজ।

করোনা শুরু হওয়ার পর সরকার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য স্কুল ও কলেজগুলো বন্ধ ঘোষণা করে। এ সুযোগে একটি বিকাশ প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে নানা প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন প্রতারনার শিকার হয়েছে সেনবাগের লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মহিলা কলেজের সালমা আক্তার ও ফারজানা আক্তার নামের একাদশ শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী ।

প্রতারক শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সালমার মোবাইলফোনে কল দিয়ে জানান, সে দুই দফায় ২৪শত ও ৩৪শত টাকা পেয়েছে কিনা, হ্যা সূচক জাবাব দেন শিক্ষার্থী সালমা । এরপর ওই প্রতারক জানায় ওই টাকাগুলো ছিলো মূলত সরকারের করোনা কালিন সময়ে প্রণোদনার টাকা । তার উপবৃত্তির ২৩ হাজার ৫শত টাকা উপবৃত্তির কাগজপত্রে ভুল থাকায় তার বিকাশ একাউন্টে ডুকেনি। তাই উপবৃত্তির টাকা পেতে হলে ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। এই জন্য তাদের ঘরের একটি নাম্বার বলতে বলে । এরপর ওই শিক্ষার্থী তার মায়ের মোবাইল নাম্বার জানালে ওই নাম্বারে ৫ সংখ্যার একটি ম্যাসেজ আসে। এরপর শিক্ষার্থীকে তার মায়ের নাম্বারে দুই দফায় ২৩ হাজার ৫শত টাকা করে ৪৫ হাজার বিকাশ করে। এরপর ওই প্রতারক চক্র শিক্ষার্থীর মায়ের একাউন্ট থেকে ৪৫ হাজার ও শিক্ষার্থীর নিজের ২হাজার টাকা সহ ৪৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

অপরদিকে ফারজানা আক্তার নামের একাদশ শ্রেণীর অপর এক শিক্ষার্র্থীকেও প্রতারক শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তার মোবাইলফোনে কল দিয়ে জানান ,সে দুই দফায় তার মোবাইল ফোনে ২৪ করে ৪৮শ টাকা পেয়েছে কিনা। এরপর শিক্ষার্থীরা হ্যা সুচক জবার দিলে ওই প্রতারক চক্র জানান ওই টাকাগুলো ছিলো মুলত সরকারের করোনা কালিন সময়ে প্রণোদনার টাকা। তার উপবৃত্তির ৩০ হাজার টাকা উপবৃত্তির কাগজপত্রে ভুল থাকায় তার বিকাশ একাউন্টে ডুকেনি। তাই উপবৃত্তির টাকা পেতে হলে ভুল গুলো সংশোধন করতে হবে। এইজন্য তাদের ঘরের একটি নাম্বার বলতে বলে এরপর একে একে শিক্ষার্থীর বড় ভাই, ফুফু ও চাচীর নাম্বার হ্যাক করে ১৯ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে সেনবাগের অপর ৪টি কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বিকেলে প্রতারক চক্রের কথা স্বীকার করে জানান, তারা এ বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতনতা করার জন্য প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং নোটিশ বোর্ডে নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,প্রতারকদের থেকে শিক্ষাথী সহ সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বিকাশ কখনো গ্রাহকের গোপন নম্বর জানতে চায়না। তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন