নোয়াখালী সংবাদদাতা:
নোয়াখালীতে করেনা হাসপাতালে অক্সিজেন না থাকায় রোগীর মৃত্যু হওয়ার অভিযোগে ভাঙচুর চালিয়েছে নিহতের স্বজনেরা।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালীর ১২০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাজেদা আক্তার (৪২) সদর উপজেলার ৪নং কাদির হানিফ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামের নুর মো. সুজনের স্ত্রী। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবে রোগী মারা যায়।
কোভিড হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত (১৩ জুলাই) ওই নারী করোনা পজেটিভ হয়ে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে নোয়াখালীল কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়। একপর্যায়ে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের সমন্বয়ক ডা. নিরুপম দাস রোগীর স্বজনদের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, অক্সিজেনের কোন অভাব ছিলনা। এ সময় নিহতের স¦জনেরা উত্তেজিত হয়ে আইসিইউতে থাকা ভেন্টিলেটর মেশিনসহ ৫-৬টি মেশিন ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের স্বজনেরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, আইসিইউ মেশিন ভাঙচুরের কারণে করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যাহত হবে। আগামী ১ মাসের মধ্যে করেনায় গুরুত্বর অসুস্থ কোন রোগীকে আইসিইউ সেবা সহজে দেওয়া সম্ভব হবেনা।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন জানান, করোনা হাসপাতালে এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে । তবে পুলিশ যাওয়ার আগে হাসপাতালে ভাঙচুরকারীরা লাশ নিয়ে পালিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মাসুম ইফতেখার জানান, বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তবে রোগীর মৃত্যু ক্ষেত্রে অক্সিজেনের কোন অভাব ছিলনা বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও জানান, আগে থেকেই এ রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। অক্সিজেনের অভাব থাকলে একজন রোগী মারা যেত না। তাহলে বেশ কয়েকজন রোগী মারা যেত বলেও মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরও ২২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৬৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ ফল পাওয়া যায়। এতে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এতে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চৌদ্দ হাজার ৮৫২ জন। মোট আক্রান্তের হার ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় এই নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৭ জনে। এদিকে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৭০৫ জন। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে (শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম) ভর্তি রয়েছেন ৯৮ জন ও আইসোলেশনে গত ২৪ ঘন্টায় কোন রোগী চিকিৎসাধীন নেই।
Leave a Reply